ক্রীড়া ডেস্ক ॥ বারবার দিক পাল্টানো ম্যাচে লড়াই গিয়ে ঠেকল শেষ বলে। টুর্নামেন্টের সফলতম মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়ে দিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। রোমাঞ্চকর লড়াই দিয়ে শুরু হলো আইপিএলের চতুর্দশ আসর। উদ্বোধনী দিনে ২ উইকেটে জিতেছে বিরাট কোহলির দল। শিরোপাধারী মুম্বাইয়ের ১৫৯ রান শেষ বলে পেরিয়ে গেছে দলটি। শেষ ওভারে ৭ রান প্রয়োজন ছিল ব্যাঙ্গালোরের। শেষ ৩ বলে ৩। স্ট্রাইকে ছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। দুই রানের চেষ্টায় তিনি রান আউট হলে কিছুটা শঙ্কায় পড়ে যায় দল। কিন্তু মার্কো ইয়ানসেনের শেষ দুই বলে দুটি সিঙ্গেল নিয়ে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ব্যাঙ্গালোর। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ২৭ রানে ৫ উইকেট নেওয়া হার্শাল প্যাটেল জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। ২৭ বলে দুই ছক্কা ও চারটি চারে ৪৮ রানের বিস্ফোরক ইনিংসে ব্যাঙ্গালোরের জয়ে ডি ভিলিয়ার্স রাখেন বড় অবদান। এক আসর পর ভারতে ফিরল আইপিএল। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে এবার নেই ‘হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে’ ম্যাচ। উদ্বোধনী ম্যাচ হলো চেন্নাইয়ে। এমএ চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামে শুক্রবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দ্রুত রোহিত শর্মাকে হারায় মুম্বাই। একটি করে ছক্কা ও চারে ১৫ বলে ১৯ রান করে রান আউটে কাটা পড়েন দলটির অধিনায়ক। ক্রিজে গিয়েই ঝড় তোলেন ক্রিস লিন। ধীরে ধীরে শট খেলতে শুরু করেন সূর্যকুমার যাদব। দুই জনের ব্যাটে দৃঢ় ভিত পেয়ে যায় মুম্বাই। একাদশ ওভারে দলটির স্কোর ছিল ১ উইকেটে ৯৪ রান। সেখান থেকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে লক্ষ্যটা নাগালে রাখে ব্যাঙ্গালোর। ২৩ বলে ৩১ রান করা সূর্যকুমারকে কট বিহাইন্ড করে ৪৪ বল স্থায়ী ৭০ রানের জুটি ভাঙেন কাইল জেমিসন। দারুণ এক ফিরতি ক্যাচ নিয়ে লিন-ঝড় থামান ওয়াশিংটন সুন্দর। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ৩৫ বলে তিন ছক্কা ও চারটি চারে করেন ৪৯। ঝড় তোলার মঞ্চ ছিল প্রস্তুত। কিন্তু কাউকেই জ¦লে উঠতে দেননি হার্শাল। হার্দিক পান্ডিয়াকে দিয়ে শুরু করেন শিকার। পরের ওভারে থামান ঝড়ের আভাস দেওয়া ইশান কিষানকে। শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে বিদায় করেন কাইরন পোলার্ড ও ক্রুনাল পান্ডিয়াকে। চতুর্থ বলে মার্কো ইয়ানসেনকে বোল্ড করে হার্শাল ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো নেন ৫ উইকেট। রান তাড়ায় শুরুতেই ওয়াশিংটন সুন্দরকে হারায় ব্যাঙ্গালোর। থিতু হয়ে ফিরেন কোহলি। অধিনায়কের ২৯ বলে খেলা ৩৩ রানের ইনিংসে চারটি চার। গত আসরে কোনো ছক্কা না পাওয়া গ্লেন ম্যাক্সওয়েল গেরো কাটান ১০০ মিটার দূরত্বের ছক্কায়। পরে সুইচ হিটে মারেন আরেকটি। তাকে ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন ইয়ানসেন। শেষ দিকে নিয়মিত উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে পথ দেখান এবি ডি ভিলিয়ার্স। ১৯তম ওভারে জাসপ্রিত বুমরাহর ওভার থেকে ১২ রান নিয়ে সমীকরণ সহজ করে ফেলেন তিনি। তবুও হাত থেকে ছুটতে বসেছিল ম্যাচ। কিন্তু বল হাতে নায়ক এগিয়ে আসেন এবারও। শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে করেন শুভ সূচনা। সংক্ষিপ্ত স্কোর: মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স: ২০ ওভারে ১৫৯/৯ (রোহিত ১৯, লিন ৪৯, সূর্যকুমার ৩১, কিষান ২৮, হার্দিক ১৩, পোলার্ড ৭, ক্রুনাল ৭, ইয়ানসেন ০, রাহুল ০, বুমরাহ ১*; সিরাজ ৪-০-২২-০, জেমিসন ৪-০-২৭-১, চেহেল ৪-০-৪১-০, শাহবাজ ১-০-১৪-০, হার্শাল ৪-০-২৭-৫, ক্রিস্টিয়ান ২-০-২১-০, সুন্দর ১-০-৭-১)। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর: ২০ ওভারে ১৬০/৮ (সুন্দর ১০, কোহলি ৩৩, রজত ৮, ম্যাক্সওয়েল ৩৯, ডি ভিলিয়ার্স ৪৮, শাহবাজ ১, ক্রিস্টিয়ান ১, জেমিসন ৪, প্যাটেল ৪*, সিরাজ ০*; বোল্ট ৪-০-৩৬-১, বুমরাহ ৪-০-২৬-২, ইয়ানসেন ৪-০-২৮-২, ক্রুনাল ৪-০-২৫-১, রাহুল ৪-০-৪৩-০)। ফল: রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ২ উইকেটে জয়ী ম্যান অব দা ম্যাচ: হার্শাল প্যাটেল
Leave a Reply